মানিকগঞ্জে অবৈধ হাসপাতালে চিকিৎসা দিচ্ছে প্যারামেডিক
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি:মোঃ রেজাউল করিম রেজা
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে ডাক্তারবিহীন চোখের চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ জেলার শিবালয় উপজেলায় উখুলী ইউনিয়নের কাতরাসিন চক্ষু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের চক্ষু চিকিৎসার জন্য ২০০৭ সালে উথুলী ইউনিয়নের কাতরাসিন গ্রামে এই হাসপাতালটি তৈরী করে। কিন্তু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোন নজরদারি না থাকায় চলছে নানা অনিয়ম। প্রতিদিন শতাধিক রোগী সকাল ৯ টায় এসে ১৫০ ও বর্হিবিভাগে ২০০ টাকা টিকিট কেটে ডাক্তারের অপেক্ষায় থেকে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন। দুপুর হলেই রোগীদের চিকিৎসা শুরু করে ডাক্তার পরিচয় দানকারী প্যারামেডিক এনামুল হক। তিনি চোখের সব ধরনের সমস্যাসহ সকল জটিল রোগের ব্যবস্থাপত্র দিয়ে পাঠান অন্য কক্ষে। সেখানে বসা বিএ পাশ করা সাকিলা সুলতানা। তিনি কম্পিউটার দিয়ে রোগীদের চোখের রোগ ও পাওয়ার নির্নয় করেন। এরপর তারা অভিনব কায়দায় চশমা বিক্রি করেন রোগীদের কাছে। এ ছাড়াও পরে অতিরিক্ত দামে ওষুধ কিনতে বাধ্য করানো হয় এমন অভিযোগ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের।
এই হাসপাতালটির লাইসেন্স ২০২২-২৩ অর্থ বছর পর্যন্ত নবায়ন থাকলেও ২০২৩-২৪ ও ২০২৪-২৫ অর্থ বছর পর্যন্ত লাইসেন্স নবায়ন করেনি। এই হাসপাতালে নেই, কোন ডাক্তার, ডিপ্লোমা নার্স, অপটো মেট্রিস ও বিভিন্ন যন্ত্রপাতিসহ ফার্মাসিষ্ট লাইসেন্স। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ২০০৭ সালে ১০ বেডের অনুমোদন নিয়ে ৩০ বেডে রোগী রাখেন, যা সম্পূর্ন নিয়ম বহি:ভূত। এভাবে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন জেলার দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। সার্টিফিকেট বিহীন ভুয়া ডাক্তার দিয়ে প্রতিদিন প্রায় লাখ টাকা বানিজ্য করে যাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন ধরে এমন অনিয়ম-অব্যবস্থাপনা চললেও কর্তৃপক্ষ নীরব ভূমিকায়।
চিকিৎসা নিতে আসা মাধবী ঘোষ,আবু বক্কর,হাসনা বেগম ও রংমালাসহ আরো একাধিক রোগীদের সাথে কখা বললে তারা বলেন, এই ডাক্তার এখানে অনেক আগের থেকেই চোখের চিকিৎসা করে। এই হাসপাতালে কোন দিন অন্য কোন ডাক্তার দেখি নাই। উনি ডাক্তার কিনা আমরাতো জানিনা,উনি কাগজে যা লিখে দেয়, হেই ঔষুধ খাই।
হাসপাতালের ইনচার্জ লোকমান হোসেনের সঙ্গে মুঠোফোনে কথা বললে, মেডিকেল এসিন্ট্যান্ট রোগী দেখে এই কথা স্বীকার করে বলেন, আমি হাসপাতালের কাগজপত্র নিয়ে সিভিল সার্জনের সাথে কথা বলে এসেছি। তিনি মেডিকেল এসিন্ট্যান্ট দ্বারা রোগী দেখাতে না করেছে। পরে তারা এসে আমাদের হাসপাতাল দেখবে।
মেডিকেল এসিন্ট্যান্ট এনামুলহকের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার চিকিৎসার ব্যবস্থাপত্র দেওয়া রাইট নাই। আজকে ডাক্তার নেই তাই আমি চিকিৎসা দিচ্ছি।
এ ব্যাপারে জেলার সিভিল সার্জন ডা: মো: মকছেদুল মোমিনের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন,কাতরাসিন চক্ষু হাসপাতালের বিষয়টি আমার জানা নেই, তবে কোন অনিয়ম থাকলে আমরা ব্যবস্থা নিব।