রাজনৈতিক দুই মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্য দূরত্ব আরোও প্রকাশ্য,
(শেখ শহিদুল ইসলাম মিঠু ব্যূরো প্রধান খুলনা)
নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে এক সময়ের রাজনৈতিক দুই মিত্র বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব আরো ও প্রকাশ্য এসেছে, বিএনপি দ্রুত নির্বাচন আয়োজনে সরকারকে চাপ দিয়ে আসলেও জামায়ত এগোচ্ছে ভিন্ন কৌশলে, দলটি প্রয়োজনীয় ও অতি জরুরি সংস্কারে প্রক্রিয়া শেষে নির্বাচন চায়, এজন্য প্রয়োজনীয় সময় দিতে চাই সরকারকে, স্থানীয় সরকার নির্বাচন দিয়েও জামায়াত বিএনপির বিপরীত অবস্থান, জাতীয় নির্বাচনের আগে বিএনপি কোনভাবেই স্থানীয় নির্বাচন চায়না, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হলে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছে জামায়াত,এ ছাড়া সংক্রানুপাতের ভিত্তিতে আসল নির্ধারণের পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে দলটি, বিএনপি এই ব্যবস্থার বিপক্ষে, নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে গত রোববার বৈঠক করে বিএনপি, বৈঠকে ইসির নির্বাচন প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চান বিএনপি নেতারা, ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্য নিয়ে ইসি কাজ করছে বলে বিএনপি নেতাদের জানানো হয়, বৈঠকের চারদিন পর জামায়াতের একটি প্রতিনিধি দল নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে, দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার প্রতিনিধিদের নেতৃত্ব দেন, বৈঠকে প্রয়োজনীয় জাতীয় নির্বাচন, স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়, বৈঠক শেষে মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে তারা নির্বাচন চান, এছাড়া জনগণের আনাকাঙ্ক্ষা হলো জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আগে স্থানীয় নির্বাচন জামায়াত এই আকাঙ্ক্ষাকে সম্মান করে, ওদিকে গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বলেন যত দ্রুত নির্বাচন ততই রাজনীতি সহজ হবে, বাংলাদেশ স্থিতিশীল হয়ে আসবে, ইসির সঙ্গে সাক্ষাতে জামায়াত সংখ্যানুপতিক পদ্ধতিতে নির্বাচন চেয়েছে এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হল ফখরুল বলেন, এটা (সংখ্যা!নুপাতিক ভোট) আমরা পুরোপুরি বিরোধী, একেবারে জোরালোভাবে বিরোধী, আনুপাতিক ভাবে নির্বাচনের কোন ব্যবস্থাকে আমরা সমর্থন করবো না, কারণ এখানকার মানুষ এটাতে অভ্যস্ত না, এরকম ভোটের প্রশ্নের উঠতে পারেনা, স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে জামায়াতের অবস্থানের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলো, মির্জা ফখরুল বলেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠান, এটাতে ও আমরা একেবারেই একমত নই এটা তো সমস্ত রাজনৈতিক বিবেচনায় দেশকে আরো ও ভঙ্গুর অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার একটা পরিকল্পনা ছাড়া আর কিছুই না, জাতীয় নির্বাচন কেন এখন জরুরী তার ব্যাখ্যাও দেন বিএনপি মহাসচিব, তিনি বলেন নির্বাচনটা হওয়ার প্রধানত দুইটি কারণ, একটি হচ্ছে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে নিয়ে আসা আরেকটা হল সুশাসন চালু করা, এখন তো সুশাসনের খুব সমস্যা হচ্ছে এটি কার্যকর করলেই তখন দেখবেন অর্থনীতি ভালো হয়ে আসবে, একটা নির্বাচিত সরকার না হলে এটাকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন তো, জরুরী সংস্কারের পর ভোট চাই জামায়াত, বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে বৈঠক করে জরুরী সংস্কারের পর ভোট সংখ্যাানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতি চালু এবং আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বৈঠক শেষে দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এই তথ্য জানিয়ে বলেন, নো ইলেকশন উইদাউট রিফর্মস, অন্তত নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান জড়িত সেগুলোর সংস্কার করেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন করাতে হবে, তা না হলে নির্বাচন নিরপেক্ষ, অবাক ও সুষ্ঠু হবে না, পূর্বের তিনটি নির্বাচনে জনগণ যে ভোট দিতে পারেননি আবারও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে, দুই হাজার ছাত্র জনতার জীবন এবং ৩০,০০০ আহত ছাত্র-জনতার রক্ত বৃথা যাবে, এজন্য আমরা বলেছি শুধু নির্বাচন প্রক্রিয়া সুষ্ঠু করতে যেসব সংস্কার প্রয়োজন করতে হবে, আমরা সম্পূর্ণ রাষ্ট্রের সংস্কারের কথা বলিনি, এখানে অনেকে ভুল বোঝার চেষ্টা করেন, তিনি জানান, সংস্কার করতে গেলে সময় লাগে, এটা সরকারের দায়িত্ব, কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব নির্বাচনকে নিরপেক্ষ করা, সেজন্য যে সংস্কার টুকু নিম্নতম প্রয়োজন, তার জন্য যতটুকু সময় যৌক্তিক প্রয়োজন, জামায়াতে ইসলামী সে সময় দিতে প্রস্তুত, কোন দিন মাস খন বেধে দেননি জামায়াত, জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক, আমরা জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে সমর্থন এবং সম্মান ব্যক্ত করছি, তিনি বলেন ৩০০ আসনে নির্বাচন করার সক্ষমতা জামাত ইসলামের আছে, আমরা প্রার্থী প্রস্তুত করে ফেলেছি, প্রাথমিকভাবে প্রার্থী ও চূড়ান্ত করা হয়েছে, মিয়া গোলাম পরওয়ারের বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনার কে প্রফেশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পি,য়ার ) আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হাড়ের নির্বাচন ব্যবস্থা চালু সুপারিশ করছি বিশ্বের ৬০টি, দেশে এ ব্যবস্থা চালু রয়েছে, বেশি শক্তির প্রভাব মুক্ত রেখে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এই পদ্ধতিটি উপযোগী, গণপতি নিযুক্ত আদেশে ৯৯ (এ) অনুচ্ছেদ পূর্ণবহালের দাবিও করা হয়েছে, রাজনৈতিক উদ্দেশ্য এই ক্ষমতা খর্ব করা হয়েছিল, এছাড়া রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, নিবন্ধন আইনে কঠিন সত্য আরোপ করা হয়েছে, এ কঠিন সত্য পূরণ করে (নিবন্ধন করা) রাজনৈতিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে, এ আইনটা সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক, এটা বাতিল করতে হবে দল ও রাজনীতি করার অধিকার সবার, মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে,জামায়াতের প্রতিনিধি দলের ছিলেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল এ এ এইচ এম আমি দূর রহমান আজাদ, নির্বাহী পরিষদের সদস্য মতিউর রহমান আকন্দ, প্রকাশনা ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি কর্ম পরিষদ সদস্য এডভোকেট জসিম উদ্দিন সরকার, মজলিসে শূরার সদস্য এডভোকেট ইউসুফ আলী, মহানগর জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য এডভোকেট কামাল উদ্দিন, অন্যদিকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন, চার নির্বাচন কমিশনার মোঃ আনোয়ারুল ইসলাম সরকার, আব্দুল রহমানের মাসুম তাহোমিদা আহাম্মদ ও আবুল ফজল মোহাম্মদ সানাউল্লাহ এবং পিসি সচিব আক্তার আহমেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন,