
১৫ দিনেও গ্রেফতার হয়নি রাজিব
সাংবাদিক মফিজুলকে পিটিয়ে জখম, প্রতিবাদ করায় সাংবাদিক জুলফিকারকে ‘মেরে ফেলার’ হুমকি
নিউজ দৈনিক আমাদের দেশের খবর প্রতিদিন, এর, নিজেস্ব প্রতিবেদক।
প্রশাসনের নিরবতায় সাংবাদিক সমাজে ক্ষোভ, এলাকাবাসীর নিরাপত্তাহীনতা চরমে গাজীপুর মহানগরের কোনাবাড়ী ৮ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ালিয়াবাড়ী ক্লাব মোড় এলাকায় ভয় আর আতঙ্কের নাম হয়ে উঠেছে রাজিব নামের এক ব্যক্তি। মাদক, চাঁদাবাজি, জমি দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে দীর্ঘদিন ধরে জড়িত থাকা এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও তাকে এখনো গ্রেফতার না করায় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক ও এলাকাবাসী। সম্প্রতি এই রাজিব ফের আলোচনায় আসেন সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায়। সাংবাদিক মফিজুল ইসলাম অভিযোগ করেন, গত ১৯ জুলাই রাজিব ও তার সহযোগীরা তাকে একটি গ্যারেজে আটকে রেখে নির্মমভাবে মারধর করে। শরীরজুড়ে গভীর ক্ষতের চিহ্ন নিয়ে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে ২০ জুলাই কোনাবাড়ী মেট্রো থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
কিন্তু ১৫ দিন পার হলেও এখনো পর্যন্ত রাজিবকে গ্রেফতার করা হয়নি। বরং তিনি প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন এবং প্রতিবাদকারীদের হুমকি দিয়ে চলেছেন। এ ঘটনায় প্রতিবাদ জানানোয় সিনিয়র সাংবাদিক ও কোনাবাড়ী থানা প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ জুলফিকার আলী জুয়েলকেও সরাসরি ‘মেরে ফেলার’ হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, থানায় অভিযোগের পর তদন্তের নামে কালক্ষেপণ হচ্ছে। এখন পর্যন্ত অভিযুক্তকে তলব, জিজ্ঞাসাবাদ বা গ্রেফতার করা হয়নি। এক প্রবীণ সাংবাদিক বলেন,
“আমরা একাধিকবার থানায় গিয়ে রাজিবের ভয়ংকর কার্যকলাপের কথা জানিয়েছি। অথচ তিনি এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। প্রশাসন যেন অপরাধীদের রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছে।” বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন বলেন,
“একজন গণমাধ্যমকর্মীকে প্রকাশ্যে মারধর করে যদি কেউ প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াতে পারে, তাহলে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে কীভাবে?”
তিনি অবিলম্বে রাজিবকে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। রাজিবের বিরুদ্ধে সুসংগঠিত সন্ত্রাসী বাহিনী পরিচালনারও অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী, জমির মালিক এবং সাধারণ মানুষ জানিয়েছেন, তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। অনেকে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না, কেউ কেউ পরিবার নিয়ে এলাকা ছাড়ছেন।
গণমাধ্যমকর্মীদের মতে, এটি শুধু একজন সাংবাদিকের উপর হামলা নয়—এটি সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ও মতপ্রকাশের অধিকারের ওপর সরাসরি আঘাত। তারা সতর্ক করেছেন, এ ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে যদি কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, তবে ভবিষ্যতে সাংবাদিকতার পথ আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠবে।